Sunday 13 June 2010

মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতন মেনে নেয়া যায় না : মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের ঘোষণা



দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের প্রতিবাদ, অবিলম্বে তার মুক্তি এবং পত্রিকাটির অব্যাহত প্রকাশনা নিশ্চিতের দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছেন সাংবাদিক ও পেশাজীবীরা। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় এ সমাবেশ হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ সংহতি প্রকাশ করেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল হাইকোর্ট মোড় ঘুরে পুরানা পল্টন হয়ে আবার প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে সাংবাদিক ও পেশাজীবী নেতারা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করে আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালিয়ে তাকে অজ্ঞান করে ফেলা হয়েছে। লোমহর্ষক নির্যাতনের যে বর্ণনা মাহমুদুর রহমান আদালতে দিয়েছেন, সেটা শোনার পর কোনো বিবেকবান মানুষ প্রতিবাদ না করে পারেন না। একজন সম্পাদককে বিবস্ত্র করা মানে পুরো সাংবাদিক সমাজকে বিবস্ত্র করা।
সম্পাদকদের অপমানিত করা। এটা কোনো সম্পাদক ও সাংবাদিক মেনে নিতে পারেন না। যারা এটা করেছে, তাদের আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। একদিন না একদিন তাদের বিচার হবেই। একই দাবিতে আজ সোমবার বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পেশাজীবীদের সমাবেশ হবে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী। সমাবেশে বক্তৃতা করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব এমএ আজিজ, ডিইউজে সভাপতি আবদুস শহিদ, সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (এ্যাব) নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিজু, জাতীয় পেশাজীবী ফোরামের মহাসচিব ডা. এএনএম কামরুল হাসান, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মীর আহমেদ মীরু, কাদের গণি চৌধুরী, আমার দেশ-এর ইউনিট চিফ বাছির জামাল প্রমুখ। সমাবেশে আরও সংহতি জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা টিএইচ আইয়ুব, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সহকারী মহাসচিব জাকির হোসেন, জাতীয়তাবাদী গবেষণা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শাহাদত হোসেন, জিয়া ব্রিগেডের আহ্বায়ক জাহিদ ইকবাল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রহিম, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল হক নাসির, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি কামাল আহমেদ, দক্ষিণের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইছহাক সরকার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মোহসীন বিশ্বাস, মামুন হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশে রুহুল আমিন গাজী বলেন, সরকার আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে ৪ হাজার মানুষের রুটি-রুজি অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। স্বৈরাচারী কায়দায় আমার দেশ বন্ধ ও আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে সম্পাদককে গ্রেফতার করে বুঝিয়ে দিয়েছে তারা অবাধ তথ্যপ্রবাহে বিশ্বাস করে না।
শওকত মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী কায়দায় আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদককে গ্রেফতার করে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এটা প্রমাণ করে সরকার অতীতের মতো বাকশালী কায়দায় দেশ চালাতে চাইছে। সংবিধান, আইন ও মানবাধিকার আজ ভূলুণ্ঠিত। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কাছে সবকিছু আজ অসহায়। এটা চলতে পারে না। গণতন্ত্রমনা মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ ও পত্রিকা বন্ধ একসূত্রে গাঁথা। হাজার হাজার পরিবারকে অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়ে স্বৈরাচারী স্টাইলে আমার দেশ বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদ জানানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমার দেশ বন্ধ ঘোষণা দেশের সব গণমাধ্যমের জন্য হুমকি উল্লেখ করে অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া বলেন, দেশের প্রতিটি মিডিয়া এখন সরকারি খড়গের আশঙ্কায় অনিশ্চয়তার মধ্যে চলছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা অবিলম্বে আমার দেশের বিরুদ্ধে সরকারের বৈরী আচরণ বন্ধ করা এবং সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তির দাবি জানান।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/06/14/35106

No comments:

Post a Comment