Thursday 10 June 2010

১৬ মামলায় দুই শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী এলাকাছাড়া

ভোলায় নির্বাচনী সহিংসতা

ভোলা-৩ আসনের (লালমোহন-তজুমদ্দিন) উপনির্বাচনে বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া ১৬টি মামলার আসামি দুই শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী এলাকার বাইরে অবস্থান করছেন। গ্রেফতার আতঙ্কে তারা এলাকায় ফিরতে পারছেন না। উপজেলার শীর্ষ ৩০ নেতা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিলেও অন্য আসামিরা গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে আছেন। বিএনপি নেতাদের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার তারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লালমোহন উপজেলায় ১১টি মামলা দায়ের হয়। চাঁদাবাজি, লুটপাট, মারধরসহ বিভিন্ন ঘটনায় এসব মামলা দায়ের হয়। আওয়ামী লীগের সুকুমার কর্মকার বাদী হয়ে ২৯ বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করে ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম মামলা করেন। এতে উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কসহ শীর্ষ নেতাদের আসামি করা হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি লর্ড হার্ডিঞ্জ প্যায়ারীমোহনের আফসার উদ্দিন বাদী হয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরসহ ৪৬ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ২৭ মার্চ বিএনপির ১৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন। আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে বিএনপির আরও ২০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন। এ মামলায় বিএনপি নেতা মোঃ মোস্তফাকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। খোকন বকশী বাদী হয়ে বিএনপির ২৩ জনকে আসামি করে ২০ এপ্রিল আরেকটি মামলা করেন। এ মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা জহিরুল হক সুমন ও মৎস্য ব্যবসায়ী বাবুল ফরাজীকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯ এপ্রিল পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের রুহুল আমিন বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান টিটবসহ বিএনপির ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আওয়ামী লীগ কর্মী জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে বিএনপির ৫১ জনকে আসামি করে ২০ এপ্রিল আরও একটি মামলা করেন। মামলায় নয়ানী গ্রামের মোঃ কামাল নামে আরেক ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৭ মে বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করে ফরাশগঞ্জ ইউনিয়নের আসুলী গ্রামের আনিচুল হক মামলা করেন। ১০ মে বিএনপির ১৮ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেন লালমোহন ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের শেখ সোহেল। দেওয়ালকান্দির জামাল হোসেন একটি মামলায় লালমোহন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হাই হাওলাদার, পৌর কাউন্সিলর ইমাম হোসেনসহ বিএনপির বিভিন্ন এলাকার ২৩ জনকে আসামি করেন। কালমা ইউনিয়নের আমির হোসেন মীর বাদী হয়ে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাহাদুরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন।
অন্যদিকে তজুমদ্দিন উপজেলায় বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের হয়। এসব মামলার বাদীরা সবাই আওয়ামী লীগের। আসামির তালিকায় উপজেলা বিএনপি সভাপতি-সম্পাদক না থাকলেও পার্টি ও তার অঙ্গসংগঠনের শতাধিক কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র এনায়েত কবীরের বিরুদ্ধে দুটি, যুগ্ম আহ্বায়ক ও চরভুতা ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান টিটবের ৪টি, যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল পঞ্চায়েতের ২টি, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুবদল সভাপতি মার্শাল হিমরু ৪টি, পৌর যুবদল সভাপতি ও কাউন্সিলর ইমাম হোসেনের সর্বাধিক ৭টি, কালমা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাহাদুরের ৩টি, উপজেলা যুবদল সম্পাদক হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে ৩টি, পৌর ছাত্রদল সভাপতি সামছুদ্দিন জসীমের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা রয়েছে।
তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ মোস্তাফিজুর রহমান, লালমোহন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান টিটবসহ আসামিরা জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাদের আসামি করা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দায়ের করা মামলায় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে।

http://www.samakal.com.bd/details.php?news=17&action=main&option=single&news_id=71351&pub_no=362

No comments:

Post a Comment