Saturday 10 April 2010

গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বিডিআর হাবিলদারের মৃত্যু

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২-এ বুধবার রাতে বিদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত এক বিডিআর সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম বাইজি উজ্জামান (৫১)। তিনি ফরিদপুর জেলার সালতা থানার বল্লভদি গ্রামের আলিমুজ্জামানের ছেলে। তিনি ১৩ রাইফেল ব্যাটালিয়নের হাবিলদার ছিলেন। এ নিয়ে গত ৫০ দিনে ওই কারাগারে বিদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত তিন বিডিআর সদস্যের মৃত্যু হলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাইজি বুধবার সন্ধ্যার দিকে বুকে ও পেটে ব্যথা অনুভব করেন। অসুস্থ অবস্থায় তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাত ৮টার দিকে গাজীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় কিন্তু হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বাইজির লাশ তার ছোটভাই আকাইদুজ্জামানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডেপুটি জেলার মোঃ মুশফিকুর রহমান জানান, বাইজি উজ্জামান এমআই (মাইয়ো কার্ডিয়াল ইনফ্যাকশন) রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ঢাকায় গ্রেফতারের পর তাকে ২০০৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। সেখান থেকে একই বছর ১৫ মে তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/09/26658

Tuesday 6 April 2010

দ্রুত বিচার আইনের মেয়াদ ২ বছর বাড়ল

সমকাল প্রতিবেদক | মঙ্গলবার | ৬ এপ্রিল ২০১০ | ২৩ চৈত্র ১৪১৬ | ২০ রবিউস সানি ১৪৩১

চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিগত বিএনপি জোট সরকারের আমলে প্রণীত দ্রুত বিচার আইনের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। তবে এখন এটা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে। জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে এ অধ্যাদেশটি আইনে রূপান্তরের জন্য উত্থাপন করা হবে।
আইনটির সর্বশেষ মেয়াদ ছিল আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু বর্তমানে এই আইনের অধীনে বিচারাধীন ২ হাজার ৫৯৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বিচারাধীন ১৭৪১ এবং তদন্তাধীন ৮৫৭টি। সরকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইনটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে মামলাগুলোর বিচারকার্য নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। এই দিক বিবেচনা করে সরকার আইনটির মেয়াদ বাড়িয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিরোধী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সমকালকে বলেন, মূলত রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্যে এই আইনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বিরোধী দলকে নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে এই আইনটি ব্যবহার করা হবে বলে তিনি আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলেন, বিগত জোট সরকারের আমলে যখন এই আইনটি করা হয়, তখন আওয়ামী লীগ এটিকে
কালো আইন বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল। তবে বিরোধী দলের এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল
ইসলাম গতকাল সমকালকে বলেন, এ রকম আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। বিরোধী দলকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, এই আইনের কোনো অপপ্রয়োগ হবে না। মূলত অনিষ্পন্ন মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্যই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তাছাড়া স্পর্শকাতর ও চাঞ্চল্যকর মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। এতে করে অপরাধীরা শিক্ষা নিতে পারবে। অপরাধের পরিমাণ কমে আসবে।
গত ২০০২ সালে বিএনপি জামায়াত জোট সরকার চাঞ্চল্যকর মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্য নিয়ে দ্রুত বিচার আইন প্রণয়ন করে। সেই সময় থেকে বিশেষ করে চাঁদাবাজি, রাহাজানি, ভয়ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টিকারী, টেন্ডারে বাধাদানের চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর ঘটনাগুলোর বিচার এই আইনে করা হয়। আইন অনুযায়ী সরকার গেজেটের মাধ্যমে প্রত্যেক জেলায় এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় এক বা একাধিক দ্রুত বিচার আদালত গঠন করে এসব অপরাধের বিচার করে। আইনানুযায়ী এসব অপরাধ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাব-ইন্সপেক্টর পদের একজন কর্মকর্তাকে। এসব অপরাধ থানায় অভিযোগ আকারে দায়েরের পর তিনি সর্বোচ্চ ৭ দিনের মধ্যে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে দ্রুত বিচার আদালতের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে এসব অপরাধের বিচারকার্য সম্পন্ন করা হয়।
এই আইন মোতাবেক কোনো ব্যক্তি আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ করলে নূ্যনতম ২ বছর ও সর্বোচ্চ ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং তদুপরি অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হন। এমনকি কেউ আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নে কাউকে সহযোগিতা করলে তিনিও একই সাজা ভোগ করেন। প্রথমে এই আইন ২ বছর মেয়াদে করা হয়। অর্থাৎ এই আইনের মেয়াদ ছিল ২০০৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। পরে গত ২০০৪ সালে আবার ২ বছরের জন্য আইনটির মেয়াদ বৃদ্ধি করে। এভাবে তিন দফা ২ বছর করে মেয়াদ বৃদ্ধি করে আইনটির সর্বশেষ মেয়াদ ছিল আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু বর্তমানে এই আইনের অধীনে বিচারাধীন ২ হাজার ৫৯৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বিচারাধীন মামলা ১ হাজার ৭৪১ এবং তদন্তাধীন মামলা রয়েছে ৮৫৭টি। আইনটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে মামলাগুলোর বিচারকার্য নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। এই দিক বিবেচনা করে আইনটির মেয়াদ বাড়ানো হলো বলে জানিয়েছে সরকার পক্ষ।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, বৈঠকে বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন-২০১০ অনুমোদন করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালে এ আইনটি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছরের ২৮ জুলাই একটি খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তা অনুমোদন দেন। পাশাপাশি ৭ লাখ টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ওই আইনটি আর চূড়ান্ত হয়নি। তিনি জানান, ১৯৮৪ সালে গঠিত ক্রীড়াবিদ কল্যাণ ট্রাস্টের সব সম্পত্তি বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনে আত্মীকরণ করা হবে। এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ অনুমোদন এবং বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন-২০১০-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

Saturday 3 April 2010

মামলাই সরকারের প্রধান এজেন্ডা



ফকরুল আলম কাঞ্চন ও আলাউদ্দিন আরিফ

মামলা করাই এখন বর্তমান সরকার ও সরকারি দলের লোকজনের প্রধান এজেন্ডা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিরোধী মতের লোকজনকে দমন-নিপীড়নের জন্য মামলাকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন সরকারি দলের নেতাকর্মীরা। ছোটখাটো বিষয়েও একের পর এক মামলা দেয়া হচ্ছে। মামলাবাজিতে নতুন ধারা হিসেবে যুক্ত হয়েছে সিরিজ মামলা। একই বিষয়ে বিভিন্ন এলাকায় এক বা একাধিক ব্যক্তির নামে সিরিজ মামলা হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে একই ঘটনায় ২৩টিসহ ৩০টি, জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুকের বিরুদ্ধে ১৯ ও জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলার উদ্দেশ্য একটাই—হয়রানি ও বিরোধী মতের লোকজনকে ঘায়েল করা। মামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না সাংবাদিক ও পেশাজীবীরাও। শুধু যে নতুন মামলা দেয়া হচ্ছে তা-ই নয়; কয়েক বছরের পুরনো, এমনকি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে এমন মামলাও পুনরুজ্জীবিত করে বিরোধী মতের লোকজনকে হয়রানি করা হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর বহু মামলায় বিরোধী দলের একাধিক নেতাকর্মীকে শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে জামিনের পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাই শুধু নন, বিরোধী দলের গ্রাম-ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রায় সবার নামে একের পর এক মামলা দেয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের বিরুদ্ধেও মামলার বহর বেড়েই চলেছে। অপরদিকে বিভিন্ন স্থানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা হামলা-নির্যাতনের শিকার হলেও তাদের মামলা থানা পুলিশ নিচ্ছে না। বিরোধী মতের লোকজন আদালতে মামলা করলেও রাজনৈতিক বিবেচনায় সেগুলো খারিজ হয়ে যাচ্ছে।
বর্তমান সরকার ১৪ মাসে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে তেমন কোনো সাফল্য দেখাতে না পারলেও মামলাবাজিতে যথেষ্ট দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছে। মামলা দেয়া, মামলা তুলে নেয়া কিংবা পুনঃতদন্তের মাধ্যমে ভিন্নমতের লোকদের মামলায় জড়িয়ে দেয়া, মামলা থেকে নিজেদের লোকদের নাম বাদ দেয়া—এসব নিয়ে কেটেছে সরকারের বিগত ১৪ মাস। অতীতে সরকারি দলের নানা অপকর্ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দায়ের করা ৪ হাজার ১৪৩টি মামলা রাজনৈতিক বিবেচনার কথা বলে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এখানেও চরম একচোখা নীতি নিয়েছে সরকার। বিরোধী দলের মাত্র দুটি মামলা নামকাওয়াস্তে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওই দুটি মামলার মধ্যে তারেক রহমানের মামলাটি বাদী আগেই প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। আর অপর মামলাটি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে দায়ের করা ঠুনকো মামলা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বর্তমান সরকার নতুন মামলা দেয়ার পাশাপাশি ব্যাপকহারে পুরনো মামলা সচল করছে। গত চারদলীয় জোট সরকারের সময় এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দু’বছরে নিষ্পত্তি হওয়া বহু মামলা আবার সচল করা হয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সহিংসতা, সংঘর্ষ, লুটপাট, আলোচিত হত্যাকাণ্ড, অস্ত্র, বিস্ফোরক ও অপহরণ মামলাসহ নিষ্পত্তি হওয়া অনেক মামলা আবার সচল করা হয়েছে। এসব মামলায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের টার্গেট করে আসামি করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া বহুল আলোচিত ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে শেখ হাসিনার সমাবেশে বোমা বিস্ফোরণ মামলা, চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধার মামলা, বগুড়ার কাহালুতে এক ট্রাক গুলি উদ্ধার মামলা, রমনা বটমূলে বোমা বিস্ফোরণ মামলা, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বিস্ফোরণ মামলাসহ বেশ কিছু পুরনো মামলার পুনঃতদন্ত শুরু করেছে এ সরকার। ২১ আগস্ট, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়া হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি পুরনো মামলায় বাবরকে শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে বারবার রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। লালবাগের সাবেক এমপি নাসিরউদ্দিন আহম্মদ পিন্টুকে বিডিআর বিদ্রোহ মামলা ও নারায়ণগঞ্জে বোমা বিস্ফোরণ মামলায় সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুকে একুশে আগস্ট গ্রেনেড বিস্ফোরণ মামলায় জড়ানো হয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহছানুল হক মিলনকে ঘটনার ৬ বছর পর দায়ের করা মোবাইল ফোন ও ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনতাইয়ের মতো ঠুনকো মামলায় জড়িয়ে জামিন আবেদন নাকচ করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। একইভাবে এহছানুল হক মিলনের এলাকা চাঁদপুরের কচুয়ায় সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সাজানো মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জেলহাজতে পাঠানো হচ্ছে। কোনো কোনো জেলায় আওয়ামী লীগ কর্মীরাই অপকর্ম, দস্যুতা করে নিজেরা বাদী হয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করছে। এভাবে দেশজুড়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের চরম হয়রানি করা হচ্ছে।
শুধু রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীই নন, বর্তমান সরকার স্বাধীন সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করতে ডজন ডজন মামলা দিয়ে সম্পাদক ও সাংবাদিকদের হয়রানি করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও জ্বালানি উপদেষ্টার ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশের পর দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার বিরুদ্ধে একই ঘটনায় নজিরবিহীনভাবে ২৩টি মামলা দায়ের করা হয়। সব মামলাই দায়ের করেন বর্তমান শাসক দলের নেতারা। একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২১ জেলায় সরকারদলীয় নেতাদের মামলা দায়েরের ঘটনা এটিই প্রথম। এছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দুর্নীতি অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের কারণে আমার দেশ সম্পাদক ও প্রতিবেদকদের বিরুদ্ধে আরও এক ডজনের বেশি মামলা হয়েছে।
জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধেও সিরিজ মামলা শুরু হয়েছে। সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করায় ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতারা তার বিরুদ্ধে ঢাকায় দুটি, খুলনা, ঝালকাঠি ও টাঙ্গাইলে একটি করে মোট ৫টি মামলা করেছেন। দেশব্যাপী সাংবাদিকরা এই সিরিজ মামলায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন।
এছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করেছে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা। এসব মামলায় বহু সাংবাদিক এখন হুলিয়া নিয়ে ফেরার জীবনযাপন করছেন। সাজানো মামলায় অনেককে জেলেও যেতে হয়েছে।
মামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না জাতীয় সংসদের সদস্যরাও। বর্তমান জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় অবৈধভাবে ভিওআইপি ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনেন। এরপর তিনিও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের রোষানলের শিকার হন। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক মামলা হতে থাকে। গতকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা নিয়ে মন্তব্য করায় বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগ নেতারা সিরিজ মামলা দায়ের করেন। এসব মামলা গ্রহণ করে আদালত সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।
সরকারের মামলাবাজি থেকে রেহাই পাননি রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইর সাবেক দুই প্রধানসহ অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা। নতুন তদন্তের নামে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তাদের জড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গ্রেফতার করে দফায় দফায় রিমান্ডে আনা হয়েছে। লন্ডনে গিয়ে এক সাক্ষাত্কারে ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলও সরকারি মামলা থেকে রেহাই পাননি।
গত অক্টোবরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপসের ওপর ‘রহস্যজনক’ বোমা হামলা হয়। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় কয়েকশ’ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশীদের মেয়ে মেহনাজ রশীদকে চার মাসের কন্যাসন্তানসহ গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তাকে শিশুকন্যাসহ চার দফা রিমান্ডে নেয়া হয়। একই মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিব হত্যা মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়া লে. কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিন আহমদ আর্টিলারির দুই ছেলে, মেজর (অব.) বজলুল হুদার দুই ভাতিজা ও মেজর (অব.) ডালিমের ভাইকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরও দফায় দফায় রিমান্ডে আনা হয়।
জামায়াত নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের একটি বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার সাজানো অভিযোগ তোলা হয়। এই অভিযোগে জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ কয়েক নেতার বিরুদ্ধে সিরিজ মামলা করা হয়। রাজশাহীতে ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যা মামলায় সরকার ঘোষণা দিয়ে চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করে মামলা দেয়। ছাত্রশিবিরের বহু নেতাকর্মীকে মামলায় জড়িয়ে রিমান্ডে এনে হয়রানি করে। এমনকি চট্টগ্রামে মামলা দায়ের ছাড়াই ছাত্রশিবিরের ৭০ নেতাকর্মীকে রিমান্ডে আনা হয়। যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত নেতাকর্মীদের গণহারে হয়রানি করা হচ্ছে। জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা, নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ বেশ কয়েকজন জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে সিরিজ মামলা দেয়া হচ্ছে।
মামলার শিকার ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমান সরকারের ১৪ মাসে দেশে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন ও নিষ্পেষণ দুর্বিষহ মাত্রায় পৌঁছে গেছে। বিরোধী দল ও বিরোধী মতকে বিনাশের অপপ্রয়াস হিসেবে গণতন্ত্রের মোড়কে একদলীয় বাকশাল কায়েমের জন্যই সরকারি দলের নেতাকর্মীরা হামলা-মামলার পথ বেছে নিয়েছে। তারা এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেন।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/04/25827

দাবি বাস্তবায়ন না হলে আন্দোলনে যাবে সাংবাদিকরা



Sat 3 Apr 2010 9:37 PM BdST

ঢাকা, ০৩ এপ্রিল (আরটিএনএন ডটনেট)-- নির্যাতন ও মানবাধিকার লংঘনে সরকার রেকর্ড ভঙ্গ করেছে অভিযোগ করে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, মামলা প্রত্যাহারসহ নয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনে যাবে সাংবাদিকরা।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে সাংবাদিক মহাসমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন এ মহাসমাবেশের আয়োজন করে।

সাংবাদিক নেতারা বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা ও বাঁচার তাগিদেই সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

সমাবেশে সাংবদিকদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারসহ ঘোষণাপত্রের দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১৬ জুন কালো দিবসে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয়।

বর্তমান সরকার ঐতিহ্যগতভাবে ফ্যাসিবাদী অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার সত্যকে সহ্য করতে পারে না। তাই তারা সাংবাদিকদের কলম কেড়ে নিতে চায়।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘নির্যাতন ও মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে আমরা আপনাদের পাশে আছি।’

তিনি বলেন, আজকের আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নয়, তার লাশ বিক্রির আওয়ামী লীগ।

সাংবাদিক আতাউস সামাদ বলেন, নির্যাতিত সাংবাদিকদের মধ্যে সব মতের সাংবাদিকরা রয়েছেন। এজন্য নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ জানানো জরুরী।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কাদেরকে ভয় দেখাচ্ছেন। ১৯৭১ সালে হামলার অন্যতম প্রধান শিকার ছিল জাতীয় প্রেসক্লাব। পাকিস্তানি নৃশংস সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিল সাংবাদিকরা।’

আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, আমার দেশ সাংবাদিক নির্যাতন ও মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে আদর্শিক ভূমিকা পালন করছে। সাহস করে সত্য সংবাদ ছাপতে দ্বিধা করে না।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ঐতিহ্যগতভাবে একটি ফ্যাসিবাদী সরকার। ফ্যাসিবাদ মানেই মানবাধিকার বিরোধী।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজউদ্দিন আহমদ, বর্তমান সভাপতি শওকত মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এম এ আজিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুস শহীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. অধ্যাপক সদরুল আমিন প্রমুখ।

আরটিএনএন ডটনেট/এএম/এসআই_ ১৯২৬ ঘ.

http://rtnn.net/details.php?id=23266&p=1&s=3

Thursday 1 April 2010

৩ মাসে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে নিহত ২৪, রাজনৈতিক সহিংসতায় ৫২

Manobzamin | Friday, 02 April 2010

স্টাফ রিপোর্টার: জানুয়ারি থেকে মার্চ। এই তিন মাসে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ২৪ জন নিহত হয়েছেন| নিহতদের মধ্যে র‌্যাব কর্তৃক ১২ জন, পুলিশ কর্তৃক ৯ জন এবং র‌্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে ৩ জন নিহত হয়েছে বলে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার জানিয়েছে। অধিকারের এক প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৫ জন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে থাকাকালে মারা গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নিহত ২৪ জনের মধ্যে ২০ জনই ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার বা বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন। এক জন র‌্যাব ও তিন জন পুলিশের নির্যাতনে নিহত হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

নিহত ২৪ জনের মধ্যে দু’জন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (লাল পতাকা)-র সদস্য, একজন গণমুক্তিফৌজের সদস্য, এক জন গণবাহিনীর সদস্য, একজন জাসাস নেতা, একজন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য, একজন এ্যাপোলো হাসপাতালের কর্মচারী, দুই জন যুবক, একজন কথিত সন্ত্রাসী, একজন গাড়ি ছিনতাইকারী, ১০ জন কথিত অপরাধী এবং তিনজন কথিত ডাকাত বলে জানা গেছে। অধিকারের ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত ও পানি সমস্যা নিয়ে বলা হয়- অন্যান্য বছরের মতোই চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ এই তিন মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। এই তিন মাসে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ২০ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করে। এদের মধ্যে ৯ জনকে পিটিয়ে এবং ১১ জনকে গুলি করে হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া একই সময়ে বিএসএফ-এর হাতে ২৪ জন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ২০ জন গুলিতে আহত এবং ৪ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এই সময়কালে ৪ জন বিএসএফ-এর হাতে অপহৃত হয়েছেন। এছাড়া ভারত এর আগে বাংলাদেশের সঙ্গে যে চুক্তি করেছে তা বাস্তবায়ন করেনি। যেমন, ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির ক্ষেত্রে ছিটমহল এবং সীমানা নির্ধারণের প্রশ্নে আজ পর্যন্ত কোন অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য প্রাপ্যতার ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান এখনও স্বীকৃত হয়নি।

রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যু ৫২
অধিকার-এর তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারি-মার্চ এই তিন মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৫২ জন নিহত এবং ৩৭৪১ জন আহত হয়েছেন। চলতি মাসে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ১৫৪টি এবং বিএনপি’র ২৭টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ৮ জন নিহত এবং ১৫৮ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, বিএনপি’র অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ৩২০ জন আহত হয়েছেন।

নারীর প্রতি সহিংসতা
জানুয়ারি-মার্চ এই তিন মাসে নারীর প্রতি সহিংসতা অব্যাহত ছিল। বহু নারী এ সময় ধর্ষণ, যৌতুক, এসিড সন্ত্রাস এবং ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছেন।

চলতি বছরের তিন মাসে মোট ১২২ জন নারী ও মেয়ে শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ৫৩ জন নারী এবং ৬৯ জন মেয়ে শিশু। ৫৩ জন নারীর মধ্যে ১১ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এবং ২৬ জন গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ৬৯ জন মেয়ে শিশুর মধ্যে ৫ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে, ২৪ জন গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং ১ জন আত্মহত্যা করেছেন। এদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় একজন গৃহবধূ এএসআই কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হন, যশোরে এক গৃহবধূ আনসার সদস্য এবং জয়পুরহাটে ৮ বছরের এক শিশু গ্রামপুলিশের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন।

জানুয়ারি-মার্চ এই তিন মাসে ৬৮ জন নারী যৌতুক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪৬ জনকে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে এবং ২০ জন বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময়ে ২ জন নারী যৌতুকের কারণে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন। জানুয়ারি-মার্চ এই তিন মাসে ৪০ জন এসিডদগ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে ২২ জন নারী, ১৪ জন পুরুষ এবং ৪ জন শিশু। ৪ জন শিশুর মধ্যে ৩ জন মেয়ে শিশু এবং ১ জন ছেলে শিশু।

সাংবাদিকদের ওপর হামলা
জানুয়ারি-মার্চ এই তিন মাসে সাংবাদিকরা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ সময়ে ৩৮ জন সাংবাদিক আহত, ২৬ জন হুমকির সম্মুখীন এবং ১৭ জন লাঞ্ছিত হয়েছেন। এই সময়ে ৮ জন সাংবাদিকের ওপর এবং একটি সংবাদপত্রের অফিসে হামলা হয়েছে।

জেলহাজতে মৃত্যু
এই সময়কালে ১৮ জন জেলহাজতে এবং ১ জন কোর্ট হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেন।

http://www.mzamin.com/index.php?option=com_content&task=view&id=10015&Itemid=83

যুদ্ধাপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে হবে: রেনেটা

RTNN Thu 1 Apr 2010 4:35 PM BdST

ঢাকা, ০১ এপ্রিল (আরটিএনএন ডটনেট)-- যুদ্ধাপরাধের বিচারকে জটিল বিষয় হিসাবে উল্লেখ করে বিদায়ী জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ও ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি রেনেটা লক এ বিচারে আন্তর্জাতিক মান এবং আইনের শাসনের প্রতিফলন দেখতে চেয়েছেন। বলেছেন, ‘আমরা চাই এ বিচার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হোক।’

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমদের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রেনেটা লক বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পর্কে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইন এবং পরিস্থিতির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। ইউএনডিপিসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সরকারের এই উদ্যোগকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে করছে বলেও তিনি জানান।

http://rtnn.net/details.php?id=23200&p=1&s=3