Sunday 27 March 2011

থামছে না বিচারবহির্ভূত হত্যা








অলিউল্লাহ নোমান

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থামছে না। অব্যাহত আছে ক্রসফায়ার বা এনকাউন্টারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে হাইকোর্ট বিভাগের জারি করা কারণ দর্শানোর রুলগুলো এখন হিমাগারে। গত তিন বছরে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে হাইকোর্ট বিভাগ ৪টির বেশি কারণ দর্শানোর রুল জারি করেছেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে দায়ের করা রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩টি এবং হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি কারণ দর্শানোর রুল জারি করেছেন। এই কারণ দর্শানোর রুলগুলো কবে কখন শুনানি হবে, এ বিষয়ে কেউ কিছুই জানে না। এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে বললেও তা বন্ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০০৬ সালের হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবিতে একটি রিট আবেদন করেছিল। এই রিট আবেদনের প্রাথমিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট কারণ দর্শানোর রুল জারি করেছিলেন। একই বছরের ২৫ মে ঢাকার লালবাগের টুণ্ডা হত্যা নিয়ে আরেকটি রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট বিভাগ।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও অবৈধ ঘোষণা চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এবং কর্মজীবী নারী নামের ৩টি মানবাধিকার সংগঠন যৌথভাবে রিট আবেদন করে ২০০৯ সালের জুন মাসে। একই বছরের ২১ জুন হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা হবে না এবং বন্ধের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না—জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর রুল জারি করেন।
সর্বশেষ ২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বর মাদারীপুরে বন্দুকযুদ্ধের নামে লুত্ফর খালাসী ও খায়রুল খালাসী নামের দুই ভাইকে হত্যার অভিযোগে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে কারণ দর্শানোর রুল জারি করেন। এই রুলে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা দুই ভাইকে ক্রসফায়ারের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কেন হত্যা মামলা করার নির্দেশ দেয়া হবে না। এই রুল জারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হাইকোর্ট বিভাগে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তখন নির্ধারিত তারিখে তাদের পক্ষে সময়ের আবেদন জানানো হয়। এর মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের কিছু বেঞ্চ পরিবর্তন ও বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন হয়।
এই পরিবর্তনের পালায় স্বপ্রণোদিত হয়ে যে বেঞ্চটি রুল জারি করেছিলেন সেই বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন হয়। এতে রুলটির শুনানি হিমাগারে চলে যায়। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে এ পর্যন্ত জারি করা সব কারণ দর্শানোর রুলই এখন হিমাগারে।
মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১০ সালে সারা বছরে ১২৭ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ৫, ফেবুু্রয়ারিতে ১২, মার্চে ৭, এপ্রিলে ৯, মেতে ১৮, জুনে ১১, জুলাইয়ে ১০, আগস্টে ৯, সেপ্টেম্বরে ১০, অক্টোবরে ১১, নভেম্বরে ১৫ ও ডিসেম্বরে ১০ নাগরিক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
অধিকারের তথ্য অনুযায়ী এর আগের বছর ২০০৯ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যকাণ্ডের শিকার হয়েছেন মোট ১৫৪ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৯, ফেবু্রুয়ারিতে ২, মার্চে ১, এপ্রিলে ৫, মেতে ১৮, জুনে ৭, জুলাইতে ৫, আগস্টে ১৯, সেপ্টেম্বরে ৩৬, অক্টোবরে ২৮, নভেম্বরে ১৪ ও ডিসেম্বরে ১০ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
চলতি বছরের ফেবু্রয়ারিতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ১৭ জন। এর আগের মাসে গত জানুয়ারিতে সাতজন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এদিকে গত ১ মার্চ একদিনে র্যাব-পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন তিনজন।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ঘোষণায়ও ছিল ক্ষমতায় এলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা হবে। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ তো হয়নি বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেড়েছে।
ক্রসফায়ারের নামে নিহত হওয়া ঢাকার বাপ্পি ও আরিফের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্তে। এই তদন্ত রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না হলেও বিভিন্ন সোর্সে তখন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায়, মিরপুরের পল্লবী থানায় ২০১০ সালের জানুয়ারিতে নিহত হওয়া মহিউদ্দিন আরিফ ও ৯ অক্টোবর রামপুরায় নিহত হওয়া মডেল কায়সার মাহমুদুর বাপ্পির ক্রসফায়ার ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রমাণিত হলেও দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো শাস্তির উদ্যোগ বা আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি

অধিকারের মাসিক প্রতিবেদন : ফেব্রুয়ারি বিচারবহির্ভূত হত্যা ১৭ : জেল হেফাজতে মৃত্যু ৯

স্টাফ রিপোর্টার

ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ১৭ জন। জেল হেফাজতে মারা গেছেন ৯ জন। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও দু’জন। রাজনৈতিক সহিংসতায় ১০ জন নিহত ও ১০১৫ জন আহত হয়েছেন। ৪৭ নারী ও মেয়েশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল সংগঠনটি তাদের মাসিক মানবাধিকার রিপোর্ট প্রকাশ করে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরে রিপোর্টে ১০ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। বিশেষ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদের বিচারের সম্মুখীন করার দাবি জানানো হয়। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সীমান্তে হত্যার বিষয়ে যথাক্রমে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ার নিন্দা জানিয়ে এসব ইস্যুতে সরকারকে তার অঙ্গীকারকৃত ‘জিরো টলারেন্স’ পালন করার আহ্বান জানানো হয়। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে আটক এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধার বিষয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
সরকারকে গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার পথকে সঙ্কুচিত ও বাধাগ্রস্ত করা থেকে বিরত এবং আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, মোশরেফা মিশুসহ রাজনৈতিক কারণে আটককৃতদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানানো হয়। সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের ও হুমকি প্রদানকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবি করা হয়।
রিপোর্টে বলা হয়, গত মাসে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাত ৩৪টি এবং বিএনপির ১১টি ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ৩ জন নিহত এবং ৪২১ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ১ জন নিহত ও ৮২ জন আহত হন। আর ধর্ষণের শিকার ৪৭ জনের মধ্যে ১৬ নারী ও ৩০ মেয়ে শিশু রয়েছে। ১৬ নারীর মধ্যে ১ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে, ১১ জন গণধর্ষণের শিকার এবং ১ জন ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন। ৩০ মেয়ে শিশুর মধ্যে ৩ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে, ৯ জন গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এবং ২ জন ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘আমি সব সময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ছিলাম। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে চলছে। এটা রাতারাতি বন্ধ করা সম্ভব নয়’—বক্তব্য উদ্ধৃত করে রিপোর্টে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে এমন বক্তব্য দেয়ার দিনই ঢাকার মিরপুরে বোটানিক্যাল গার্ডেনে নুরুল ইসলাম সুমন নামে এক যুবক পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন এবং পরদিনই ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে জাসদ গণবাহিনীর কথিত আঞ্চলিক কমান্ডার হজরত বেলাল যৌথবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন।
এ বক্তব্যের সমালোচনা করে বলা হয়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার দু’বছর পর এ প্রথম প্রধানমন্ত্রী ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ হচ্ছে বলে স্বীকার করলেন। এর আগে সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা অস্বীকার করে আসছিলেন।
রিপোর্টে বলা হয়, ফেব্রুয়ারি মাসে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে র্যাব কর্তৃক ৮, পুলিশ কর্তৃক ৬ এবং র্যাব-পুলিশ কর্তৃক ৩ জন নিহত হয়েছেন।
নিহত ১৭ জনের মধ্যে দু’জন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা), একজন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (জনযুদ্ধ), একজন গণবাহিনীর, দু’জন গণবাহিনীর (জাসদ) সদস্য, দু’জন যুবক, একজন ৫২ বছর বয়সী ও ৮ জন কথিত অপরাধী বলে জানা গেছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে ৯ জন ‘অসুস্থতাজনিত’ কারণে জেল হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও ৪ জন বিচারবহির্ভূতভাবে র্যাব ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসময় একজন সাবেক বিডিআর জওয়ান হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুর এলাকা থেকে সাদা পোশাকে ও পোশাকধারী র্যাব সদস্যরা মুদি দোকান কর্মচারী রফিকুল ইসলামকে (৫০) ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। রফিকুলের পরিবারের সদস্যরা অধিকারকে জানান, ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তারা র্যাব সদর দফতর, স্থানীয় থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়েছেন; কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা অধিকারকে জানান, ঘটনার দিন বিকালে র্যাবের পোশাকধারী এবং সাদা পোশাকের ১৫-২০ সদস্য দোকান থেকে রফিকুলকে আটক করে নিয়ে যায়। কী অপরাধে তাকে আটক করা হয়েছে—এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানায়নি। দিন-দুপুরে রফিকুলকে আটক করে নেয়ার এ দৃশ্য আশপাশের অন্যান্য দোকানদার, পথচারী ও সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষ করেছেন।
আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর পরিকল্পনা ইস্যুতে যেসব বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সাধারণ মানুষের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে বিএসএফ কর্তৃক ফেলানী হত্যার বিষয়টি উপস্থাপন করতে গিয়ে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘এটি একটি আকস্মিক ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা, যা প্রতিবেশী দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে কোনো প্রভাব ফেলেনি।’ প্রায়ই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশীদের বিএসএফ যেভাবে হত্যা এবং নির্যাতন করছে, তা যে আকস্মিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান দেখলেই তা বোঝা যাবে। অধিকার জাতীয় সংসদে মন্ত্রীর দেয়া এ বক্তব্যের নিন্দা জানায়। সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে সরকারের বাস্তবসম্মত কার্যকরী পদক্ষেপ দাবি করা হয়।
ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফ দুই বাংলাদেশীকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে এবং ৫ জন বিএসএফ কর্তৃক আহত হয়েছেন।
বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানীর পরিবারকে ‘প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেয়া এবং কুড়িগ্রাম জেলার দক্ষিণ রামখানা রহমতিয়া দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমাবেশ করার জন্য সাবেক উইং কমান্ডার হামিদ উল্লাহ ও কবি আবদুল হাই শিকদারের নেতৃত্বে একটি দল গত ৯ ফেব্রুয়ারি কুড়িগ্রামে যায়। সেখানে তাদের বাধা প্রদান, হয়রানি ও ফেলানীর বাবাকে সরিয়ে রেখে এবং ১৪৪ ধারা জারি করে তাদের উদ্যোগে বাধা দেয়ার ঘটনায় অধিকার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ভারতের ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসমের (উলফা) তিন নেতা ক্যাপ্টেন অন্তু চাউদাং, সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট প্রদীপ চেটিয়া এবং করপোরাল সৌরভকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যরা। গত ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-ভারতের মেঘালয় সীমান্তের ডাউকি এলাকা দিয়ে দীর্ঘদিন আটক রাখার পর উলফা নেতাদের ভারতের সীমান্তরক্ষীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এটা আমাদের সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপ বলে সমালোচনা করে অধিকার।
অধিকার বিডিআর বিদ্রোহের মামলায় বিডিআর জওয়ানদের বিচারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। সে সঙ্গে বিডিআর বিদ্রোহ সংক্রান্ত সরকারি তদন্ত রিপোর্টগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে জনসমক্ষে প্রকাশের জন্যও দাবি জানায়।