Thursday 18 March 2010

সংলাপে অভিমত : মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে আন্দোলনের বিকল্প নেই : মানবাধিকার রক্ষার অনুষঙ্গগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে : মাহমুদুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার
সেন্টার ফর ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ আয়োজিত মানবাধিকার সংলাপে বক্তারা বলেছেন, দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মহোত্সব চলছে। মানবাধিকার রক্ষার অনুষঙ্গগুলোও দুর্বল হওয়ায় রাষ্ট্রীয়ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে জনগণ বাধ্য হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ইডেন কলেজসহ সারাদেশে নারী নির্যাতন, বিচার বিভাগে অবহেলিত আইনের শাসন, বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সরকারের দলননীতি, সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা, বিডিআর ধ্বংসের ষড়যন্ত্র, সাংবাদিক নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যার তথ্য তুলে ধরে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে গণআন্দোলনের বিকল্প নেই। গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মানবাধিকার সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার বলেন, দেশে এখন যেটা চলছে, তা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো জনগণকে ভয়ভীতির মধ্যে রাখা। এক্ষেত্রে বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না স্বীকার করে তিনি বলেন, সংসদে কথা বলতে গেলে মাইক বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। আবার রাজপথেও কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না সরকার। এ পরিস্থিতিতে সংসদ বর্জনের মতো পদক্ষেপ নিয়ে বড় ধরনের আন্দোলনের দিকে যেতে পারে বিরোধী দল।
মানবাধিকার লঙ্ঘনে সরকারের নানা তথ্য তুলে ধরে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকারের মানবাধিকর লঙ্ঘনের সঙ্গী বিচার বিভাগ। মানবাধিকার লঙ্ঘনে অধিকাংশ মিডিয়া নিশ্চুপ। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও চোখ বুজে আছে। আবার বিরোধী দল দুর্বল। এতে সরকারের অত্যাচার ও নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়বে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে হলে জনগণের সম্পৃক্ততায় গণঅভ্যুত্থান জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সংলাপে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম। আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, মহিলা দলনেত্রী শিরিন সুলতানা, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, টিভি ব্যক্তিত্ব শমসের আলী হেলাল, গবেষক বেনজিন খান, বাংলাদেশ র্যাডিক্যাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এমরান এইচ চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সেন্টার ফর ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক সাদেক রহমান।
প্রত্যেক বক্তাই ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে সাধারণ ছাত্রীদের জোর করে এমপি-মন্ত্রীদের বাসায় নিয়ে ইজ্জত লুণ্ঠনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। অভিভাবকদের উদ্বেগ নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আমার দেশ সম্পাদক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান বলেন, একটি রাষ্ট্রযন্ত্র যখন জালিমের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, তখন তার রাশ টেনে ধরার জন্য প্রধানত চারটি গ্রুপ সক্রিয় হয়। এগুলো হলো বিচারব্যবস্থা, গণমাধ্যম, মানবাধিকার সংগঠন ও বিরোধী দল। হতাশার বিষয় হলো, এগুলোর একটির পরিস্থিতিও আশাব্যঞ্জক নয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র হত্যার পর দুই হাজারের মতো ছাত্র-জনতাকে গ্রেফতার করা হলো। গ্রেফতারকৃত দু’জন এসএসসি পরীক্ষার্থীকে শুধু পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য জামিন দেয়া হয়। চেম্বার জজ এ জামিনের আদেশ স্থগিত করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন।
বিচার বিভাগ নিয়ে কথা বলা সময় নষ্ট ছাড়া বৈ কিছু নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, মামলা নিয়ে আইনজীবীদের কাছে গেলেই কোন বেঞ্চে তা জেনে তারা সিদ্ধান্ত কী হবে বলে দেন। এ অবস্থায় আদালত রাখার প্রয়োজন আছে কিনা তা নিয়ে চিন্তা করার সময় এসেছে। তিনি বলেন, বিকল্প কোনো পদ্ধতি আছে কিনা তা ভাবতে হবে। গ্রামের সালিশদের যতটুকু সততা আছে, তাও আমাদের হাইকোর্টের জাজদের আছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এখানে সততা বলতে শুধু ঘুষ নয়, নৈতিকতার বিষয়টিও বিবেচনা করতে হবে।
১৯৭২-পরবর্তী সরকারের আদলেই সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে সরকারি দলন চলছে অভিযোগ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, মাত্র চারটি রেখে তখন বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল বর্তমান সরকারের পূর্বসূরিরা। তখন সাংবাদিকরা ঢাকা শহরে দোকানদারি করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। আর তাদের উত্তরসূরি বর্তমান সাংবাদিকরা বাকশালের উত্তরসূরিদের নেতিবাচক কাজগুলোকে কীভাবে চেপে রাখা যায়, তার প্রতিযোগিতা করছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছে সরকার।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো দলবাজিতে ব্যস্ত উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, পছন্দের সরকার ক্ষমতায় থাকলে তারা নারী নির্যাতন কিংবা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি ভুলে যান। ইডেন কলেজের বিষয়টি নিয়ে নারীনেত্রীদের সঙ্গে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে তারা বলেন, ‘আগেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে।’
বিরোধী দলের নিষ্ক্রিয় অবস্থান জাতিকে হতাশ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১৫ মাসে অনেক দুষ্কর্ম ঘটে গেছে। কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে বিরোধী দল অগোছালো। তাদের কর্মসূচি সম্পর্কে তারা আত্মবিশ্বাসী নয়। জিয়াউর রহমানের আদর্শ নিয়ে দলটি চললেও বিভিন্ন স্থানে তার ম্যুরাল ভাঙা হলো, জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও জিয়া উদ্যানের নাম পরিবর্তন করা হলো, বিরোধী দল কিছুই করতে পারেনি। এখন বলছে, জিয়ার মাজারে হাত দেয়া হলে সে হাত ভেঙে দেয়া হবে।
বিচার বিভাগ বর্তমান সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গী অভিযোগ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনে বেশিরভাগ মিডিয়া নিশ্চুপ। মানবাধিকার সংগঠনের কার্যক্রম নেই। বিরোধী দল দুর্বল। এ অবস্থায় আমাদের করণীয় কী? এ জালিম সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়বে। এ থেকে রক্ষা পেতে গণআন্দোলনের বিকল্প নেই। বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে হলে জনগণের সম্পৃক্ততায় গণঅভ্যুত্থান জরুরি।
বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশীদের আহত করছে। আর মেজর সাহেব মাইক দিয়ে বলছেন, গুলি করবেন না, উপরের নির্দেশ নেই। তার মানে বিডিআরের অস্তিত্ব নেই। বিডিআরের নামই নেই। মহাপরিচালক তো এখন বর্ডার গার্ডের প্রধান। তিনি নিজেকে গার্ডের মহাপরিচালকের পরিচয় দিতে পারেন। আর গার্ডের কি গুলি করার মানসিক জোর থাকে? এক-এগারোতে সার্বভৌমত্ব চলে গেছে। এখন যদি সার্বভৌমত্ব রাখতেই হয়, সেটা হবে সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের লড়াই।
এম কে আনোয়ার বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সাংবাদিকদের হয়রানি সবকিছুই বহুগুণে বেড়ে গেছে। গত ১৪ বছরে এ ধরনের ভয়াবহভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়নি। আওয়ামী লীগ দাবি করছে, তারা যুদ্ধ করেছে। প্রকৃত সত্য হলো, শেখ মুজিবুর রহমানসহ তারা কেউ যুদ্ধ করেনি। তারা দেশকে মালে-গণিমত মনে করে। তাই লুটেপুটে খাবে।
তিনি বলেন, এখন যেটা চলছে তা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো জনগণকে ভয়ভীতির মধ্যে রাখা। যে কোনো উপজেলা বা জেলায় যান, কর্মকর্তারা কখন ছাত্রলীগ-যুবলীগের মার খাবে, সেই ভয়ে তটস্থ। নির্মল সেন বলেছিলেন, ‘আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই।’ আর আজ আমরা বলতে চাই, আমরা স্বাভাবিক জীবনের নিরাপত্তা চাই।
এম কে আনোয়ার বলেন, আইনের শাসন না থাকলে মানবাধিকার বলতে যা বোঝায় তা থাকবে না। এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৬২টি মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আপনি কীভাবে মামলা প্রত্যাহার করতে সম্মতি দিলেন। আপনি কেন আইনের লড়াইয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সাহস পেলেন না। এর মাধ্যমে দেশবাসীর মনে হয়েছে, আপনার বিরুদ্ধে ওইসব মামলায় আনা অভিযোগ অবশ্যই সত্য ছিল। তা না হলে আইনি লড়াই করতে আপনি সত্সাহস কেন পেলেন না। গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন যে বিচারপতি, সেই বেঞ্চে আপনি কীভাবে আপনার মামলা নিষ্পত্তি করেন? এসব মামলা প্রধানত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে এম কে আনোয়ার বলেন, তাদের যে টেকনিক সংসদেও যদি তাদের নেতিবাচক কাজ সম্পর্কে কথা বলতে চান, তাহলে হৈচৈ করে তারা মাইক বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন। স্পিকারও এসব বিষয়ে কথা বলতে গেলে আমাদের নিরুত্সাহিত করেন। পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলতে চাইলে স্পিকার সুযোগ দিলেন না; বরং তিনি বললেন, আপনাদের সরকারের সময় এর বেশি দেননি। আমি ওইদিনই প্রসিডিংস এনে দেখলাম, তারা তিন ও চারবারও পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলেছেন।
এম কে আনোয়ার বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেসব কথা বলেন, তার মধ্যে সত্যের ভাগ খুব কম থাকে। একেবারে সত্য থাকে না—তা নয়। আর সংসদেই তিনি তা করেন। তিনি বলেন, সাড়ে ৯ টাকায় তারা চাল খাইয়েছে। ১৯৯৬-২০০১ সালে মোট ১ কোটি ২৫ লাখ টন খাদ্য উত্পাদন হয়েছে। এ খাদ্যের দাম ১২ টাকা ২০ পয়সার নিচে আসে না। এ তথ্যগুলো দিতে গেলেই আমার ওপর হামলা-হুমকি আসে। আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে বিএনপি আমলে নিরাপত্তার কারণে দেয়া কাঁটাতারের বেড়া এখনও আছে উল্লেখ করে এম কে আনোয়ার বলেন, সংসদে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়েও মিথ্যাচার করেছেন। এরপর প্রতিশোধ হিসেবে বললেন, ‘আমরাও কাঁটাতারের বেড়া দেবো।’ আর এর পরেরদিন বিএনপি অফিসের সামনে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হলো।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার ম্যান্ডেট ছিল একমাত্র শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি যদি ঘোষণা দিতেন তাহলে অন্য কারও প্রয়োজন দেখা দিত না। আপনারা যে রাস্তায় চলেছেন, সারাদেশের জনগণকে আপনি প্রতিপক্ষ ভাবছেন। এভাবে চললে মানুষ রুখে দাঁড়াবে।
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, এ সরকারের ক্ষমতায় আসাটাই এক ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসায় জনগণের রায় দেয়ার অধিকার খর্ব হয়েছে। আর যেহেতু জনগণের রায়ে সরকার ক্ষমতায় আসেনি, সেহেতু জনগণের চাহিদা পূরণে আওয়ামী লীগ সরকারের কিছু যায়-আসে না। যেখানে সরকারি ছাত্র সংগঠনের কারণে দেশের নারীশিক্ষার প্রধান প্রতিষ্ঠান ইডেন কলেজের ছাত্রীদের সতীত্ব নষ্ট হয়েছে, এ অভিশাপ থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করতে অবিলম্বে ছাত্রলীগ নামের সংগঠনটি নিষিদ্ধ করা উচিত। অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রাখা এবং জেলখানায় বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের হত্যার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে নিজেদের অধিকার রক্ষায় মানুষ রাজপথে নামবে। একাত্তরের মতো আবারও জেল ভেঙে বেরিয়ে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়ার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শিরিন সুলতানা বলেন, সরকার দেশ চালানো নয়, বিরোধী দল দমনে ব্যস্ত রয়েছে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যে ইডেন কলেজের ছাত্রীরা প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে, সেই কলেজের ছাত্রীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের অপকর্মের কারণে যে অভিযোগ উঠেছে, তার দায়ভার প্রধানমন্ত্রীও এড়াতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নারী হয়েও নির্যাতিত ছাত্রীদের পাশে না দাঁড়ানোয় জাতি আজ হতভম্ব। প্রধানমন্ত্রী নিজে যে কলেজে পড়াশোনা করেছেন, তার কলেজের ছোটবোনদের দুরবস্থায় তিনি কোনো উদ্যোগ না নিয়ে নিজের রুচিবোধকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
‘মানবাধিকার’ কথাটা বলতে এখন আইনজীবীরাই লজ্জা পাচ্ছেন উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি বলেন, জরুরি শাসনে দেশ না চললেও সরকার নোট জারি করে টেলিভিশনের টকশোর ওপর শর্তারোপ করছে। এখন গণতন্ত্রের নামে দেশ চললেও মূলত বর্তমান সরকার জরুরি সরকারের নতুন সংস্করণ।
বেনজিন খান বলেন, সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে যদি রাজনীতিকরা মিথ্যার আশ্রয় নেন, তবে সে দেশের জনগণ মানবাধিকার পেতে পারে না। সে রাষ্ট্রে শান্তি বিরাজ করতে পারে না। আর বাংলাদেশ এখন এমনই একটি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলছে। দুর্নীতি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালি হয়েছে, তা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় দৈনিক আমার দেশ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কোটি কোটি ডলারের মামলা করে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে।
শমসের আলী হেলাল বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার মানসিকতা সবার মধ্যে গেঁথে দিতে পারলে মানবাধিকারের আন্দোলন প্রতিষ্ঠা সম্ভব। অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, যে মামলায় সর্বোচ্চ সাজা হতে পারত তিন বছর, সে মামলায় একজন আসামিকে কারাগারে মেরে ফেলা হলো। এজন্য ওই বিচারপতিকেও বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। এদেশে বিচার বিভাগের মাধ্যমে মানবাধিকার রক্ষা করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/03/19/23435

No comments:

Post a Comment