Thursday 25 March 2010

সরকারের প্রতি হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর আহ্বান

Friday, 26 March 2010
কূটনৈতিক রিপোর্টার: বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে আয়োজিত ক্রসফায়ার নামের চিত্রপ্রদর্শনী চালানোর অনুমতি দিতে এবার বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। মতপ্রকাশের মৌলিক অধিকারের প্রতি এ ধরনের সেন্সরশিপ বা নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িত কর্মকর্তাদের বিচার করার আহ্বান জানিয়েছে এ সংস্থা।
বুধবার নিউ ইয়র্কে সংস্থার সদর দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। মঙ্গলবার এ চিত্র প্রদর্শনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এইচআরডবিস্নউ’র বিবৃতিতে বলা হয়, কোন প্রদর্শনী উদ্বোধন করতে বাধা দেয়া মত প্রকাশের স্বাধীনতার চরম লঙ্ঘন। বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা এক শ’রও বেশি ঘটেছে বলেও বিবৃতিতে উলেস্নখ করা হয়। গত ২২শে মার্চ ঢাকার দৃক পিকচার লাইব্রেরিতে ক্রসফায়ার শীর্ষক ওই চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনের কিছু আগে বন্ধ করে দেয়া হয়। সামরিক বাহিনীর প্রাধান্যে অপরাধ দমনে গঠিত র‌্যাব-এর বিরম্নদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যার বিভিন্ন অভিযোগের ওপর বিশিষ্ট চিত্রগ্রাহক শহীদুল আলম তার তোলা ছবি ও প্রতীকী উপস্থাপনা নিয়ে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। বিবৃতিতে বলা হয়, কর্মকর্তারা এসব হত্যাকে ক্রসফায়ার নামে চিহ্নিত করে। তাদের ভাষায়, সন্দেহভাজন অপরাধীকে আত্মরড়্গায় বা পালানোর সময় হত্যা করা হয়। এইচআরডবিস্নউ বলেছে, সরকারের উচিত এসব বিচার বহির্ভূত হত্যায় র‌্যাব-এর সংশিস্নষ্টতা খতিয়ে দেখা। তা না করে সরকার এ সমস্যার সমাধানে যারা জনমত গঠন করছে তাদের চুপ করানোর চেষ্টা করছে। এইচআরডবিস্নউ’র এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড এডামস বলেন, এসব হত্যাকে বাসত্মবতা থেকে হাওয়ায় মিলিয়ে দেয়া যাবে না। বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৪ সালের মধ্যভাগে বাংলাদেশে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠার পর এ সংস্থা পাঁচ শ’রও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। এইচআরডবিস্নউ এটাও প্রমাণ করতে সমর্থ যে, এসব হত্যাকাণ্ডের একটি ড়্গেত্রেও কাউকে আইনি বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে এইচআরডবিস্নউ’র রিপোর্টের সূত্র ধরে আরও বলা হয়, বেশির ভাগ ড়্গেত্রে যারা নির্যাতনে মারা গেছে বা গুলি করে মারা হয়েছে, পরে তাদের ক্রসফায়ারে মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ওই রিপোর্টে র‌্যাবকে মৌলিক সংস্কার বা বিলুপ্ত করার সুপারিশ করা হয়েছিল। এইচআরডবিস্নউ উলেস্নখ করে, বর্তমান সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে বিচার বহির্ভূত হত্যার প্রথার সমাপ্তি টানবে এই প্রতিশ্রম্নতি দিয়েই নির্বাচনে জিতেছে। অথচ তাদের হিসাবেই গত বছরে ১১১ জন ব্যক্তির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মারা গেছেন। বর্তমান সরকারের আমলে কোন বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেনি বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে এ সংস্থা বলেছে, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তদনেত্ম অনেক ড়্গেত্রেই ঘটনার শিকারকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ব্রাড এডামস সরকারের এ প্রবণতার সমালোচনা করে বলেন, সরকার নির্বাচনে জিতেছে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ধরে রাখার প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে। অথচ ড়্গমতায় আসার পর তারা এখন অন্য সুরে কথা বলছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উচিত, এ প্রদর্শনী চালু করতে সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তাদের অবিলম্বে নির্দেশ দেয়া এবং এসব ক্রসফায়ারে জড়িত র‌্যাব কর্মকর্তাদের বিরম্নদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা।

http://www.mzamin.com/index.php?option=com_content&task=view&id=9309&Itemid=83

No comments:

Post a Comment