Wednesday 23 February 2011

অধিকারের মাসিক প্রতিবেদন : গত মাসে ৭ জন বিচারবহির্ভূত হত্যা বিএসএফ হত্যা করে চারজনকে

স্টাফ রিপোর্টার

গত জানুয়ারি মাসে সাতজন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ৯ নারী ও এক শিশুকন্যা ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ ৪ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম সীমান্তে ফেলানী নামে এক কিশোরীকে গুলি করে হত্যার পর কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনা দেশ-বিদেশে ঝড় তুলেছে। গতকাল অধিকারের মাসিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
অধিকারের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, জানুয়ারি মাসে ২৬ নারী ও মেয়েশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৪ নারী এবং ১২ মেয়েশিশু। ওই ১৪ নারীর মধ্যে ৯ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এবং ১০ জন গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ১২ মেয়েশিশুর মধ্যে ১ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং ৪ জন গণধর্ষণ হয়েছে। ধর্ষণের কারণে ১ নারী আত্মহত্যা করেছেন।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা ও ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অধিকার।
অধিকারের প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারি মাসে ৪ জন জেল হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে বলে
অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে একটি দেড় বছরের শিশুকে তার মায়ের সঙ্গে জেলে রাখা হয়। সেখানে যত্নের অভাবে শিশুটি জেলে আসার ১২ দিনের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ডবচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ফলে নিহত ৭ জনই ‘ক্রসফায়ার/এনকাউন্টার/বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে র্যাব কর্তৃক ৫ জন, পুলিশ কর্তৃক ২ জন নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত ২৮৬ ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইন ভঙ্গ করে সন্দেহভাজন ব্যক্তি, আত্মগোপনে থাকা বিপ্লবী বামপন্থী এবং নিরীহ ব্যক্তিদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে।
গত ২৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে যে যাই বলুক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাজ করে যাবে। আত্মরক্ষায় তাদের ছোড়া গুলিতে সন্ত্রাসীদের মরাই স্বাভাবিক।’
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে অধিকার। অধিকার এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে, কারণ এই বক্তব্যের মাধ্যমে সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের প্রশ্নে সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়েছে।
গত ১১ জানুয়ারি ঢাকার পল্লবীতে পুলিশের গুলিতে ইমতিয়াজ হোসেন আবীর (১৯) নামে নর্দান ইউনিভার্সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর এক ছাত্র নিহত হয়েছে। নিহত পরিবারের অভিযোগ, আবীরকে ফোনে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পল্লবী থানার এএসআই ইসমাইলের নের্তৃত্বে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে তাকে ডাকাত দলের সদস্য বলে পরিচয় দিচ্ছে। আবীরের নামে থানায় কোনো মামলা বা জিডি নেই।
জানুয়ারি মাসে ৭ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডগুলো র্যাব এবং পুলিশ কর্তৃক সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

No comments:

Post a Comment