আলাউদ্দিন আরিফ
২০১০ সালের পুরোটাই ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘনের বছর। রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে ঘটেছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা। হত্যা, অপহরণ ও ক্রসফায়ারসহ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুপ্তহত্যা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে অপহরণের পর নিখোঁজ, গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার, মামলা দিয়ে হয়রানি, শ্যোন অ্যারেস্ট, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর দখল, বিডিআর বিদ্রোহে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে মৃত্যু এবং সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের দলন চলেছে বছরজুড়ে। হত্যা বন্ধের জন্য বিএসএফ প্রধানের একের পর এক প্রতিশ্রুতির পরও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন একের পর এক বাংলাদেশী নাগরিক।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দেশজুড়ে অব্যাহতভাবে চলছে ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। যেসব এলাকায় লোকজন ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন তার কোথাও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, বরং অবনতি হয়েছে। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কেন এসব ক্রসফায়ার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানায়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ—বরাবর এই ঘোষণা দেয়া হলেও তা অব্যাহতভাবেই চলেছে। আত্মরক্ষার্থে গুলিবর্ষণের দোহাই দিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যকাণ্ডকে সমর্থন দেয়া হয়েছে। আসকের হিসেব অনুযায়ী চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ১১৭ জন ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছে। এই সরকারের সময়ে গুপ্তহত্যা নামে এক ভয়ঙ্কর শব্দ শুনেছে মানুষ। অপহরণের শিকার অনেকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার হয়েছে। আসক আরও জানায়, বছরজুড়েই নাজুক ছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সহিংসতায় একের পর এক মেধাবী ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বখাটেদের উত্পাতে কলেজশিক্ষক ও মা-বাবাসহ অনেকে খুন হয়েছেন। হরতালের সময় গ্রেফতারের নামে বিরোধী দলের প্রতিবাদ জানানোর অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। হাইকোর্টে বিচারক নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সাংবাদিকরা সরকারদলীয় নেতাদের হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমিবিরোধ নিরসন নিয়ে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা, রূপগঞ্জে সেনা হাউজিং প্রকল্প নিয়ে সৃষ্ট সহিংসতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় আসকের রিপোর্টে।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকার বলেছে, চলতি বছর প্রতি তিন দিনে একজন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। প্রতি চার দিনে একজন বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছেন বিএসএফের গুলিতে। আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করা, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার ও কারাদণ্ড, বিশেষ প্রতিনিধি অলিউল্লাহ নোমানের কারাদণ্ড, চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে দেয়া, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেস বুক বন্ধ করা, ক্রসফায়ারসংক্রান্ত আলোকচিত্র বন্ধ করে দেয়া, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাহরণ, সন্ত্রাস দমন আইন ২০০৯-এ নির্যাতন ও হয়রানি, হিযবুত তাহ্রীর নিষিদ্ধ ঘোষণা, রাজনৈতিক সহিংসতার ভয়াবহতা, সভা-সমাবেশে পুলিশি বাধা, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের সংগ্রামে নিয়োজিত নেতাদের আটক করে ভারতের হাতে তুলে দেয়া, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতন, নারী নির্যাতন, যৌতুকের সহিংসতা ও ইভটিজিং, তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতা, গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ড ও ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ গায়েব, অধিকারের নির্যাতন প্রতিরোধবিষয়ক কার্যক্রমের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন নাকচ—মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে অধিকার।
চলতি বছর বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপি নেতা লুত্ফুজ্জামান বাবর, এহসানুল হক মিলনসহ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। এক কারাগার থেকে অন্য কারাগারে চালান করে হয়রানি ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের অ্যারেস্ট দেখিয়ে ও মামলা দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করেই তাকে বেদম মারধর করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেন, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, তিনি নির্যাতিত হলে তার পোশাকে রক্তের দাগ থাকত। তার জামায় রক্তের দাগ নেই। তিনি আরও বলেন, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রক্ত আর সাদা নয় যে দাগ থাকবে না। নিম্ন আদালতে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী রক্তমাখা টিস্যু উপস্থাপন করেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে সরকারপক্ষের পিপি বলেন, লাল রং মেখে ওই টিস্যু আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। এর আগে চট্টগ্রামে লুত্ফুজ্জামান বাবরের নাক দিয়ে রক্ত পড়া অবস্থায় এবং তার পাঞ্জাবি রক্তাক্ত অবস্থায় রিমান্ডে নেয়ার ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছিলেন ৫ জন। ফেব্রুয়ারিতে র্যাব-পুলিশের হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ১২ জন। জেলহাজতে মারা যান ৬ জন। মার্চ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৭ জন। এপ্রিলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ক্রসফায়ারে ৯ নিহত হয়েছেন। এপ্রিলে ৫ জন জেল হেফাজতে অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানা গেছে। গত ২৭ এপ্রিল মিজানুর রহমান সুমন নামের এক ব্যবসায়ীকে সাদা পোশাকধারী র্যাব সদস্যরা গাইবান্ধার মহিমগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে আসে। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
মে মাসে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ জনের নির্যাতনের ফলে মৃত্যু হয়েছে। গত ১১ মে চট্টগ্রামের রেয়াজউদ্দিন বাজারের আঞ্জুমান আবাসিক হোটেলের নৈশপ্রহরী মানিক মারা যান। ১৩ মে নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানা হেফাজতে রবিউল ইসলাম খোকন নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। ঢাকায় র্যাব-১ হেফাজতে আবুল কালাম আজাদ নামে এক ব্যবসায়ী মারা গেছেন।
জুনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ১১ জন। গত ৩০ জুন রাতে মিজানুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী গুলশান থানা হেফাজতে মারা গেছেন। মিজানের স্ত্রী তাসলিমা বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে বারিধারার নয়ানগর থেকে গত ২৯ জুন পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এরপর তার কাছে পুলিশ ১ লাখ টাকা চায়। টাকা না পেয়ে পুলিশ তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করে। যে রাতে তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করা হয় সে রাতেই গুলশান থানা হাজতে তিনি তার স্বামীর জন্য খাবার দিয়ে আসেন। ৩০ জুন রাতে পুলিশ মিজানকে হাত-পা বেঁধে হাজত থেকে বাইরে নিয়ে যায় এবং মাটিতে শুইয়ে পায়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে। এ ঘটনাটির তদন্ত করে অধিকার। তাদের তদন্তে প্রমাণিত হয় মিজানকে গুলি করে হত্যা করার। মিজানকে হত্যার পর তার পরিবারের অসহায় অবস্থা। তার স্ত্রী ও সন্তানদের অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটে। এরপরও তাদের ওপর নানা ধরনের হুমকি দিয়ে ওই ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য বলা হয়।
২৯ জুন রমনা থানা হেফাজতে মারা যান বাবুল গাজী নামে এক ব্যক্তি। গত ২৫ জুন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে অপহরণ করা হয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর ৫৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী আলমকে। আজও চৌধুরী আলমের প্রতীক্ষায় দিন কাটাচ্ছে তার পরিবার। স্বামীর শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন চৌধুরী আলমের স্ত্রী হাসিনা চৌধুরী (৫৫)। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে বাবার পথ চেয়ে দিন কাটায়। হাসিনা চৌধুরী ১৪ বছর ধরে ডায়াবেটিসের রোগী। স্বামীর শোকে তিনিও এখন মৃতপ্রায়। তিনি কোথায় কী অবস্থায় আছেন কোনো খবরই পাচ্ছেন না। অসুস্থ অবস্থায় স্বামীকে খুঁজতে গিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। হাসিনা চৌধুরী বলেন, একজন অসুস্থ মানুষকে কারা আটক করে নিয়ে কী অবস্থায়, কোথায় রাখা হয়েছে কিছুই জানি না। মনে হয় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর স্বামীর মুখ দেখতে পারব না। চৌধুরী আলমের ছোট ভাই খোরশেদ আলম মিন্টু বলেন, আমার ভাই যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তার আইন অনুযায়ী বিচার হোক। তিনি নিখোঁজ হওয়ার ছয় মাস হয়েছে; কিন্তু তার নিখোঁজ হওয়া নিয়ে কেউ মুখ খুলছেন না।
জুলাই মাসে ১০ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এদের মধ্যে ৬ জনই ক্রসফায়ারে মারা গেছে। ৩ জন মারা গেছে পুলিশের নির্যাতনে। গত ৩ জুলাই মজিবর নামে এক ব্যক্তিকে মিরপুরের দারুস সালাম থানার সাদা পোশাকধারী পুলিশ ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ৪ জুলাই তার লাশ তুরাগ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। মজিবরকে যখন পুলিশ ধরে নিয়ে যায় তখন তার সঙ্গে সাত বছরের ছেলে ইকবাল ছিল। পুলিশ তার ছেলের সামনেই তাকে মারধর করে এবং পানিতে ডুবায়।
আগস্ট মাসে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ৮ জন নিহত হয়েছেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, এদের মধ্যে র্যাবের হাতে ৬ জন এবং পুলিশ হাতে ১ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জনের নির্যাতনের ফলে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রেহাই পায়নি পুলিশ সদস্যরাও। গত ১৪ আগস্ট যশোর জেলার শার্শা উপজেলায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা হামিদ নামে এক বিএনপি কর্মীকে পায়ের রগ কেটে খুন করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই জের ধরে ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ এমপি শেখ আফিল উদ্দিন শার্শা থানার ওসি এনামুল হককে তার অফিসে ডেকে পাঠান। এনামুল হক এমপির অফিসে গেলে তাকে মারধর করেন আপিল উদ্দিন এমপি ও তার ক্যাডাররা।
সেপ্টেম্বর মাসে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লা নূর বাবুকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা, সিরাজগঞ্জে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সমাবেশে ৭ জনকে হত্যা করা হয়।
অক্টোবর মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ফলে নিহতদের মধ্যে ১১ জনই ক্রসফায়ারে মারা গেছে। গত ২৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে ‘আর্মি হাউজিং স্কিম’ নামে সেনাবাহিনীর আবাসন প্রকল্পের জন্য জমি গ্রহণের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে স্থানীয় জনগণ। এ সময় উত্তেজিত জনতার ওপর গুলি চালানো হয়। এরপর জনতা হামলা চালিয়ে সেনাবাহিনীর একটি জিপ, দুটি গাড়িসহ সেনা টিনশেড ব্যারাক পুড়িয়ে দেয়। এ সময় সেনাসদস্য, র্যাব ও পুলিশের গুলিতে ১৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়। এরপর রূপগঞ্জ থেকে ৪টি সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়। ওইসব ক্যাম্পে থাকা সেনা সদস্যদের হেলিকপ্টারে ঢাকায় নেয়া হয়। গত ২৪ অক্টোবর গুলিবিদ্ধ মোস্তফা জামাল হায়দার হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান।
তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। পুলিশি নির্যাতনে মারা যান ৪ জন ও জেল হেফাজতে মারা গেছেন আরও ৪ জন। গত ১৪ নভেম্বর নরসিংদী সদর মডেল থানা পুলিশের হেফাজতে শরীফ মিয়া নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। শরীফ মিয়ার মা বলেন, তার ছেলে ছিল সম্পূর্ণ নির্দোষ। সে ছিল তাঁত শ্রমিক। থানা হেফাজতে নির্যাতন করে শরীফকে হত্যা করা হয়েছে। ২২ নভেম্বর যশোরের কোতোয়ালি থানা হেফাজতে ইমরান হোসেন বাপ্পী নামে এক যুবক মারা গেছেন।
ডিসেম্বর মাসজুড়েও অব্যাহত ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘন। এই মাসে একই দিনে ডাবল ক্রসফায়ার, ত্রিপল ক্রসফায়ারের খবর প্রকাশ হয়েছে পত্রিকায়। এই মাসে কমপক্ষে ১২ জন ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন। অভিযোগ ওঠে অগ্নিকাণ্ড ও ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ গায়েবের। গত ৩ ডিসেম্বর ঢাকা, বরিশাল ও মেহেরপুরে ক্রসফায়ারে মারা যান ৩ জন। ৪ ডিসেম্বর বরিশালের বরগুনায় ছাত্রীর পা কেটে নেয় বখাটেরা। ৯ ডিসেম্বর নরসিংদীতে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত অনেকের লাশ গায়েবের অভিযোগ ওঠে। একইভাবে ১৪ ডিসেম্বর সাভারের হামীম গ্রুপের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত অনেক শ্রমিকের লাশ গায়েব করার অভিযোগও করেন তাদের স্বজনরা। এর আগে ১৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ইপিজেডে বেতনভাতার দাবিতে বিক্ষোভরত গার্মেন্ট শ্রমিকদের ওপর পুলিশের গুলিতে ৩ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। ১৬ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে। ২০ ডিসেম্বর ঢাকা ও টাঙ্গাইলে ক্রসফায়ারে নিহত হন দু’জন। ২১ ডিসেম্বর ক্রসফায়ারে মারা যান আরও দু’জন
।
No comments:
Post a Comment